বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপিত হলো পেশাদার সাংবাদিকদের বৃহৎ সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ৩ দশক উৎসব। আজ রোববার (২৬ মে) সকালে ডিআরইউ চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বর্ণ্যাঢ্য আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের, এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা জনাব গোলাম মোহাম্মদ কাদের, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনাব আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাসিম, এমপি ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জনাব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে আসেন ওবায়দুল কাদের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে গোলাম মোহাম্মদ কাদের, আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাসিম ও ডিআরইর বর্তমান কমিটির নের্তৃবৃন্দসহ সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ওবায়দুল কাদের। পায়রা উড়িয়ে তিন দশক পদার্পণ উৎসবের উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। পরে কেক কাটেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ সভাপতি জনাব সৈয়দ শুকুর আলী শুভ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারন সম্পাদক জনাব মহি উদ্দিন।
এসময় কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- যুগ্ম সম্পাদক মো: মিজানুর রহমান (মিজান রহমান), উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ, অর্থ সম্পাদক মো: জাকির হুসাইন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, নারী বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদা ডলি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনোয়ার হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুশান্ত কুমার সাহা, আপ্যায়ন সম্পাদক ছলিম উল্লাহ মেজবাহ, কল্যাণ সম্পাদক মো. তানভীর আহমেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ শিপন, মুহিববুল্লাহ মুহিব, রফিক মৃধা, দেলোয়ার হোসেন মহিন ও শরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রতিষ্ঠাকীতে শুভেচ্ছা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা স্বাধীনতা চান সরকারের কাছে। কিন্তু নিজেরা যেখানে কাজ করেন, সেখানে কি আপনি যা চাইছেন, তা লিখতে পারেন? আপনি যা দেখেন, তা কি লিখতে পারেন? সেটাই আমার বক্তব্য।’
ভুয়া সাংবাদিকদের ব্যাপারে সাংবাদিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, গঠনমূলক ও সৃজনশীল সাংবাদিকতাকে প্রধানমন্ত্রী সব সময় উৎসাহিত করেন। আওয়ামী লীগও একই নীতি অনুসরণ করে, বলেন তিনি। কোনো সাংবাদিক যাতে অর্থনৈতিকভাবে হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য সতর্ক আছেন বলে জানান।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, সাংবাদিক হিসেবে শক্তিশালী হতে চাইলে পেশাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দলমত-নির্বিশেষে সাংবাদিকেরা জনকল্যাণে শক্তি ব্যবহার করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।এরপর ডিআরই’র তিন দশকে পদার্পণ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১২টার দিকে ডিআরইউ প্রাঙ্গণ থেকে কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সংগঠনের সদস্য, সাবেক নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বের করা র্যালি রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা প্রদক্ষিণ করে। এসময় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী টি-শার্ট, রঙবেরঙের ব্যানার ফেস্টুন, বাদ্যযন্ত্র ও ঘোড়ার গাড়ি র্যালিকে বর্ণাঢ্য রূপ দেয়।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আসেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তিন দশক পূর্তি অনুষ্ঠানে ডিআরইউর বর্তমান ও সাবেক নেতাও সদস্যদের নিয়ে বেলুন উড়ান। এরপর নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিএনপির পক্ষ থেকে কেক কাটেন।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে রিজভী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের জন্য সুখকর বিষয় নয়। সাংবাদিকদের জন্য এই আইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এমন একটি আইন, যে আইন থেকে সহজেই রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, যাঁরা মুক্ত চিন্তার মানুষ, তাঁরা তাঁদের মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে কারাবন্দী হয়েছেন। এমন একটি আইন দেশে বিদ্যমান। এমন পরিস্থিতিতে সংবাদপত্রের পথচলা দুঃসাধ্যের বিষয়।
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি শফিকুল করিম সাবু, শাহজাহান সরদার, সাহেদ চৌধূরী, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, মুরসালিন নোমানী, নজরুল ইসলাম মিঠু, ডিআরইউ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহের হোসেন মাসুম, রাজু আহমেদ, নুরুল ইসলাম হাসিব, মাইনুল হাসান সোহেল, বিএফইউজের একাংশের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজের একাংশের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ডিআরইউ বহুমূখী সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম চৌধুরী খোকন এবং বিএফইউজের একাংশের যুগ্ম মহাসচিব শেখ মামুন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ডিআরইউ চত্বর বেলুন দিয়ে সাজানো এবং আলোকসজ্জা করা হয়।